Myths

7 min read

UX Myths (পর্ব ৬): দারাজে কাজ করলে আমার প্রডাক্টে ক্যান কাজ করবে না?

"ভাই, Daraz-এর প্রোডাক্ট পেজে এই নতুন ফিচারটা দেখেছেন? দারুণ তো! চলেন, আমরাও আমাদের সাইটে হুবহু এটা কপি করে ফেলি।" "Amazon যেভাবে jejich checkout process সাজিয়েছে, আমরাও সেভাবে করি। ওদের যখন কাজ হচ্ছে, আমাদেরও হবে!"

Credit:

52 Weeks of UX

এটি ডিজাইন জগতের এক অতি লোভনীয় এবং পিচ্ছিল ফাঁদ। আমরা ভাবি, "Amazon, Google, বা Daraz-এর মতো বিলিয়ন ডলার কোম্পানি যা করছে, নিশ্চয়ই তা অনেক গবেষণা আর ডেটার উপর ভিত্তি করেই করছে। সুতরাং, তাদের ডিজাইন কপি করলেই আমরাও সফল হয়ে যাব।"

কিন্তু সত্যিটা হলো, অন্যের সাফল্য দেখে তার শার্টের মাপ নিজের গায়ে লাগাতে যাওয়াটা বোকামি। যা আমাজনের জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করে, তা আপনার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

এই ব্যাপারটা বুঝতে চলুন আমরা টেক-জায়ান্টদের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে সোজা মিরপুরের ক্রিকেট একাডেমিতে চলে যাই।


গল্প: পাড়ার ক্রিকেটার ও সাকিব আল হাসান

ভাবুন, পাড়ার এক তরুণ, উদীয়মান ক্রিকেটার (ধরা যাক, তার নাম রাতুল) ঠিক করলো সে বাংলাদেশের কিংবদন্তী সাকিব আল হাসানের মতো বড় খেলোয়াড় হবে। সে ইউটিউবে সাকিবের ব্যাটিং-এর ভিডিও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দেখতে শুরু করলো।

মিথটির প্রয়োগ: রাতুলের মাথায় একটা ধারণা গেঁথে গেল: "সাকিব যেভাবে ব্যাট ধরে, যেভাবে দাঁড়ায় (batting stance), আর যেভাবে কব্জির মোচড়ে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠায়, আমি যদি হুবহু সেটা নকল করতে পারি, তাহলে আমিও তার মতো রান করতে পারবো!"

বাস্তবতা এবং কোচের পরামর্শ: রাতুলের কোচ তাকে এই বিপজ্জনক অনুকরণ করতে দেখে মাথায় হাত দিলেন। তিনি তাকে ডেকে বোঝালেন: "দেখো, সাকিবের টেকনিক তার নিজের জন্য সেরা, কারণ এর পেছনে আছে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা, অবিশ্বাস্য প্রতিভা, ফিটনেস আর পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা। তোমার শারীরিক গঠন, তোমার খেলার ধরণ, তোমার শক্তি-দুর্বলতা—সবকিছু তার চেয়ে আলাদা। তুমি তারটা হুবহু নকল করতে গেলে নিজের স্বাভাবিক খেলাটাও হারিয়ে ফেলবে। তোমার কাজ হলো আগে বেসিক ঠিক করা, ফুটওয়ার্ক শেখা, এবং নিজের জন্য সেরা স্টাইলটা খুঁজে বের করা।"


কেন আপনি শুধু আমাজন বা দারাজকে কপি করবেন না?

ঠিক রাতুলের মতোই, আপনার ছোট বা মাঝারি আকারের ব্যবসার পক্ষে আমাজনের মতো টেক-জায়ান্টকে অন্ধভাবে অনুকরণ করাটা বোকামি। কারণ:

  1. আপনাদের খেলার মাঠ আলাদা (Different Context): আমাজনের আছে কোটি কোটি ব্যবহারকারী আর লক্ষ লক্ষ প্রোডাক্ট। তাদের ডিজাইন এই বিশালতার কথা মাথায় রেখে তৈরি। আপনার হয়তো মাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট আর অল্প সংখ্যক ব্যবহারকারী আছে। সাকিব খেলে আন্তর্জাতিক মাঠে, আপনি খেলছেন পাড়ার টুর্নামেন্টে। দুজনের কৌশল এবং পরিকল্পনা এক হতে পারে না।

  2. তাদের আছে অগাধ বিশ্বাস (Established Brand Trust): আমাজন বা গুগলকে মানুষ চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। তাই তারা নতুন বা একটু জটিল কোনো ডিজাইন আনলেও ব্যবহারকারীরা সেটা শেখার জন্য সময় ও শ্রম দেয়। আপনার নতুন সাইটের জন্য আগে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে সহজ, পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য ডিজাইন দিয়ে।

  3. আপনি শুধু সাফল্যটাই দেখছেন (Survivorship Bias): আপনি আমাজনের যে সফল ডিজাইনটা দেখছেন, সেটা হয়তো তাদের ১০০টা ব্যর্থ পরীক্ষার পর উঠে এসেছে। আপনি ওই ৯৯টা ব্যর্থতার গল্প বা ডেটা জানেন না। সাকিব কোন বলে ছক্কা মারলো, তা আপনি দেখছেন; কিন্তু কোন বলে আউট হয়েছে বা কোন বল খেলতে তার সমস্যা হয়েছে, সেই ডেটা আপনার কাছে নেই।

  4. তারা প্রতিনিয়ত পরীক্ষা চালাচ্ছে (Constant A/B Testing): আপনি আমাজনের যে ডিজাইন দেখছেন, তা হয়তো স্থায়ী নয়। তারা একই সময়ে তাদের বিভিন্ন ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ডিজাইনের সংস্করণ দেখায়। আপনি যেটা দেখছেন, সেটা হয়তো শুধু ৫% ব্যবহারকারীর উপর চালানো একটি পরীক্ষা, যা কালকেই বদলে যেতে পারে।


তাহলে আপনার কী করা উচিত?

অনুকরণ নয়, অনুপ্রাণিত হন।

পার্থক্যটা বুঝুন। আমাজনের কোনো একটি ফিচার কপি না করে, বোঝার চেষ্টা করুন তারা ফিচারটি দিয়ে ব্যবহারকারীর কোন সমস্যাটা সমাধান করার চেষ্টা করছে। তারপর ভাবুন, আপনার ব্যবহারকারীদের জন্য, আপনার প্রোডাক্টের প্রেক্ষাপটে সেই সমস্যার সেরা এবং সবচেয়ে সহজ সমাধান কী হতে পারে।

অন্যের উত্তরপত্র দেখে লেখার আগে নিজের প্রশ্নপত্রটা ভালোভাবে পড়ুন। আমাজন বা দারাজের ডিজাইন তাদের প্রশ্নের উত্তর, আপনার প্রশ্নের নয়।


শেষ কথা

সফল ডিজাইনাররা অন্যের খেলার স্টাইল হুবহু নকল করে না; তারা খেলার নিয়মটা বোঝে এবং নিজের সেরা খেলাটা খেলে। আপনার কাজ হলো পরবর্তী আমাজন হওয়া নয়; আপনার কাজ হলো আপনার নিজের বাজারের, আপনার নিজের ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা সমাধানটি তৈরি করা।

আপনার কাজ হলো আপনার নিজের মাঠের সেরা খেলোয়াড় হওয়া।

এটি ডিজাইন জগতের এক অতি লোভনীয় এবং পিচ্ছিল ফাঁদ। আমরা ভাবি, "Amazon, Google, বা Daraz-এর মতো বিলিয়ন ডলার কোম্পানি যা করছে, নিশ্চয়ই তা অনেক গবেষণা আর ডেটার উপর ভিত্তি করেই করছে। সুতরাং, তাদের ডিজাইন কপি করলেই আমরাও সফল হয়ে যাব।"

কিন্তু সত্যিটা হলো, অন্যের সাফল্য দেখে তার শার্টের মাপ নিজের গায়ে লাগাতে যাওয়াটা বোকামি। যা আমাজনের জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করে, তা আপনার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

এই ব্যাপারটা বুঝতে চলুন আমরা টেক-জায়ান্টদের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে সোজা মিরপুরের ক্রিকেট একাডেমিতে চলে যাই।


গল্প: পাড়ার ক্রিকেটার ও সাকিব আল হাসান

ভাবুন, পাড়ার এক তরুণ, উদীয়মান ক্রিকেটার (ধরা যাক, তার নাম রাতুল) ঠিক করলো সে বাংলাদেশের কিংবদন্তী সাকিব আল হাসানের মতো বড় খেলোয়াড় হবে। সে ইউটিউবে সাকিবের ব্যাটিং-এর ভিডিও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দেখতে শুরু করলো।

মিথটির প্রয়োগ: রাতুলের মাথায় একটা ধারণা গেঁথে গেল: "সাকিব যেভাবে ব্যাট ধরে, যেভাবে দাঁড়ায় (batting stance), আর যেভাবে কব্জির মোচড়ে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠায়, আমি যদি হুবহু সেটা নকল করতে পারি, তাহলে আমিও তার মতো রান করতে পারবো!"

বাস্তবতা এবং কোচের পরামর্শ: রাতুলের কোচ তাকে এই বিপজ্জনক অনুকরণ করতে দেখে মাথায় হাত দিলেন। তিনি তাকে ডেকে বোঝালেন: "দেখো, সাকিবের টেকনিক তার নিজের জন্য সেরা, কারণ এর পেছনে আছে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা, অবিশ্বাস্য প্রতিভা, ফিটনেস আর পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা। তোমার শারীরিক গঠন, তোমার খেলার ধরণ, তোমার শক্তি-দুর্বলতা—সবকিছু তার চেয়ে আলাদা। তুমি তারটা হুবহু নকল করতে গেলে নিজের স্বাভাবিক খেলাটাও হারিয়ে ফেলবে। তোমার কাজ হলো আগে বেসিক ঠিক করা, ফুটওয়ার্ক শেখা, এবং নিজের জন্য সেরা স্টাইলটা খুঁজে বের করা।"


কেন আপনি শুধু আমাজন বা দারাজকে কপি করবেন না?

ঠিক রাতুলের মতোই, আপনার ছোট বা মাঝারি আকারের ব্যবসার পক্ষে আমাজনের মতো টেক-জায়ান্টকে অন্ধভাবে অনুকরণ করাটা বোকামি। কারণ:

  1. আপনাদের খেলার মাঠ আলাদা (Different Context): আমাজনের আছে কোটি কোটি ব্যবহারকারী আর লক্ষ লক্ষ প্রোডাক্ট। তাদের ডিজাইন এই বিশালতার কথা মাথায় রেখে তৈরি। আপনার হয়তো মাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট আর অল্প সংখ্যক ব্যবহারকারী আছে। সাকিব খেলে আন্তর্জাতিক মাঠে, আপনি খেলছেন পাড়ার টুর্নামেন্টে। দুজনের কৌশল এবং পরিকল্পনা এক হতে পারে না।

  2. তাদের আছে অগাধ বিশ্বাস (Established Brand Trust): আমাজন বা গুগলকে মানুষ চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। তাই তারা নতুন বা একটু জটিল কোনো ডিজাইন আনলেও ব্যবহারকারীরা সেটা শেখার জন্য সময় ও শ্রম দেয়। আপনার নতুন সাইটের জন্য আগে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে সহজ, পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য ডিজাইন দিয়ে।

  3. আপনি শুধু সাফল্যটাই দেখছেন (Survivorship Bias): আপনি আমাজনের যে সফল ডিজাইনটা দেখছেন, সেটা হয়তো তাদের ১০০টা ব্যর্থ পরীক্ষার পর উঠে এসেছে। আপনি ওই ৯৯টা ব্যর্থতার গল্প বা ডেটা জানেন না। সাকিব কোন বলে ছক্কা মারলো, তা আপনি দেখছেন; কিন্তু কোন বলে আউট হয়েছে বা কোন বল খেলতে তার সমস্যা হয়েছে, সেই ডেটা আপনার কাছে নেই।

  4. তারা প্রতিনিয়ত পরীক্ষা চালাচ্ছে (Constant A/B Testing): আপনি আমাজনের যে ডিজাইন দেখছেন, তা হয়তো স্থায়ী নয়। তারা একই সময়ে তাদের বিভিন্ন ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ডিজাইনের সংস্করণ দেখায়। আপনি যেটা দেখছেন, সেটা হয়তো শুধু ৫% ব্যবহারকারীর উপর চালানো একটি পরীক্ষা, যা কালকেই বদলে যেতে পারে।


তাহলে আপনার কী করা উচিত?

অনুকরণ নয়, অনুপ্রাণিত হন।

পার্থক্যটা বুঝুন। আমাজনের কোনো একটি ফিচার কপি না করে, বোঝার চেষ্টা করুন তারা ফিচারটি দিয়ে ব্যবহারকারীর কোন সমস্যাটা সমাধান করার চেষ্টা করছে। তারপর ভাবুন, আপনার ব্যবহারকারীদের জন্য, আপনার প্রোডাক্টের প্রেক্ষাপটে সেই সমস্যার সেরা এবং সবচেয়ে সহজ সমাধান কী হতে পারে।

অন্যের উত্তরপত্র দেখে লেখার আগে নিজের প্রশ্নপত্রটা ভালোভাবে পড়ুন। আমাজন বা দারাজের ডিজাইন তাদের প্রশ্নের উত্তর, আপনার প্রশ্নের নয়।


শেষ কথা

সফল ডিজাইনাররা অন্যের খেলার স্টাইল হুবহু নকল করে না; তারা খেলার নিয়মটা বোঝে এবং নিজের সেরা খেলাটা খেলে। আপনার কাজ হলো পরবর্তী আমাজন হওয়া নয়; আপনার কাজ হলো আপনার নিজের বাজারের, আপনার নিজের ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা সমাধানটি তৈরি করা।

আপনার কাজ হলো আপনার নিজের মাঠের সেরা খেলোয়াড় হওয়া।

এটি ডিজাইন জগতের এক অতি লোভনীয় এবং পিচ্ছিল ফাঁদ। আমরা ভাবি, "Amazon, Google, বা Daraz-এর মতো বিলিয়ন ডলার কোম্পানি যা করছে, নিশ্চয়ই তা অনেক গবেষণা আর ডেটার উপর ভিত্তি করেই করছে। সুতরাং, তাদের ডিজাইন কপি করলেই আমরাও সফল হয়ে যাব।"

কিন্তু সত্যিটা হলো, অন্যের সাফল্য দেখে তার শার্টের মাপ নিজের গায়ে লাগাতে যাওয়াটা বোকামি। যা আমাজনের জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করে, তা আপনার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

এই ব্যাপারটা বুঝতে চলুন আমরা টেক-জায়ান্টদের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে সোজা মিরপুরের ক্রিকেট একাডেমিতে চলে যাই।


গল্প: পাড়ার ক্রিকেটার ও সাকিব আল হাসান

ভাবুন, পাড়ার এক তরুণ, উদীয়মান ক্রিকেটার (ধরা যাক, তার নাম রাতুল) ঠিক করলো সে বাংলাদেশের কিংবদন্তী সাকিব আল হাসানের মতো বড় খেলোয়াড় হবে। সে ইউটিউবে সাকিবের ব্যাটিং-এর ভিডিও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দেখতে শুরু করলো।

মিথটির প্রয়োগ: রাতুলের মাথায় একটা ধারণা গেঁথে গেল: "সাকিব যেভাবে ব্যাট ধরে, যেভাবে দাঁড়ায় (batting stance), আর যেভাবে কব্জির মোচড়ে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠায়, আমি যদি হুবহু সেটা নকল করতে পারি, তাহলে আমিও তার মতো রান করতে পারবো!"

বাস্তবতা এবং কোচের পরামর্শ: রাতুলের কোচ তাকে এই বিপজ্জনক অনুকরণ করতে দেখে মাথায় হাত দিলেন। তিনি তাকে ডেকে বোঝালেন: "দেখো, সাকিবের টেকনিক তার নিজের জন্য সেরা, কারণ এর পেছনে আছে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা, অবিশ্বাস্য প্রতিভা, ফিটনেস আর পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা। তোমার শারীরিক গঠন, তোমার খেলার ধরণ, তোমার শক্তি-দুর্বলতা—সবকিছু তার চেয়ে আলাদা। তুমি তারটা হুবহু নকল করতে গেলে নিজের স্বাভাবিক খেলাটাও হারিয়ে ফেলবে। তোমার কাজ হলো আগে বেসিক ঠিক করা, ফুটওয়ার্ক শেখা, এবং নিজের জন্য সেরা স্টাইলটা খুঁজে বের করা।"


কেন আপনি শুধু আমাজন বা দারাজকে কপি করবেন না?

ঠিক রাতুলের মতোই, আপনার ছোট বা মাঝারি আকারের ব্যবসার পক্ষে আমাজনের মতো টেক-জায়ান্টকে অন্ধভাবে অনুকরণ করাটা বোকামি। কারণ:

  1. আপনাদের খেলার মাঠ আলাদা (Different Context): আমাজনের আছে কোটি কোটি ব্যবহারকারী আর লক্ষ লক্ষ প্রোডাক্ট। তাদের ডিজাইন এই বিশালতার কথা মাথায় রেখে তৈরি। আপনার হয়তো মাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট আর অল্প সংখ্যক ব্যবহারকারী আছে। সাকিব খেলে আন্তর্জাতিক মাঠে, আপনি খেলছেন পাড়ার টুর্নামেন্টে। দুজনের কৌশল এবং পরিকল্পনা এক হতে পারে না।

  2. তাদের আছে অগাধ বিশ্বাস (Established Brand Trust): আমাজন বা গুগলকে মানুষ চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। তাই তারা নতুন বা একটু জটিল কোনো ডিজাইন আনলেও ব্যবহারকারীরা সেটা শেখার জন্য সময় ও শ্রম দেয়। আপনার নতুন সাইটের জন্য আগে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে সহজ, পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য ডিজাইন দিয়ে।

  3. আপনি শুধু সাফল্যটাই দেখছেন (Survivorship Bias): আপনি আমাজনের যে সফল ডিজাইনটা দেখছেন, সেটা হয়তো তাদের ১০০টা ব্যর্থ পরীক্ষার পর উঠে এসেছে। আপনি ওই ৯৯টা ব্যর্থতার গল্প বা ডেটা জানেন না। সাকিব কোন বলে ছক্কা মারলো, তা আপনি দেখছেন; কিন্তু কোন বলে আউট হয়েছে বা কোন বল খেলতে তার সমস্যা হয়েছে, সেই ডেটা আপনার কাছে নেই।

  4. তারা প্রতিনিয়ত পরীক্ষা চালাচ্ছে (Constant A/B Testing): আপনি আমাজনের যে ডিজাইন দেখছেন, তা হয়তো স্থায়ী নয়। তারা একই সময়ে তাদের বিভিন্ন ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ডিজাইনের সংস্করণ দেখায়। আপনি যেটা দেখছেন, সেটা হয়তো শুধু ৫% ব্যবহারকারীর উপর চালানো একটি পরীক্ষা, যা কালকেই বদলে যেতে পারে।


তাহলে আপনার কী করা উচিত?

অনুকরণ নয়, অনুপ্রাণিত হন।

পার্থক্যটা বুঝুন। আমাজনের কোনো একটি ফিচার কপি না করে, বোঝার চেষ্টা করুন তারা ফিচারটি দিয়ে ব্যবহারকারীর কোন সমস্যাটা সমাধান করার চেষ্টা করছে। তারপর ভাবুন, আপনার ব্যবহারকারীদের জন্য, আপনার প্রোডাক্টের প্রেক্ষাপটে সেই সমস্যার সেরা এবং সবচেয়ে সহজ সমাধান কী হতে পারে।

অন্যের উত্তরপত্র দেখে লেখার আগে নিজের প্রশ্নপত্রটা ভালোভাবে পড়ুন। আমাজন বা দারাজের ডিজাইন তাদের প্রশ্নের উত্তর, আপনার প্রশ্নের নয়।


শেষ কথা

সফল ডিজাইনাররা অন্যের খেলার স্টাইল হুবহু নকল করে না; তারা খেলার নিয়মটা বোঝে এবং নিজের সেরা খেলাটা খেলে। আপনার কাজ হলো পরবর্তী আমাজন হওয়া নয়; আপনার কাজ হলো আপনার নিজের বাজারের, আপনার নিজের ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা সমাধানটি তৈরি করা।

আপনার কাজ হলো আপনার নিজের মাঠের সেরা খেলোয়াড় হওয়া।

Myths

7 min read

এইসব লেখা নিয়ে কি একটা নিউজলেটার চালু করা উচিত?

মেইলে জানাতে পারেন, ভালো সাড়া পেলে শুরু করতে পারি!

Create a free website with Framer, the website builder loved by startups, designers and agencies.