UX Myths (পর্ব ১): UX ডিজাইন মানেই কি শুধু 'easy to use'?
"এই অ্যাপটা ব্যবহার করতে খুব সোজা, তার মানে এর UX সেইরকম বস!"—এই কথাটা কি আপনি প্রায়ই শোনেন বা ভাবেন? যদি ভেবে থাকেন, তাহলে আপনাকে দোষ দিচ্ছি না। অনেকেই মনে করে, একটা প্রোডাক্ট ব্যবহার করা সহজ মানেই তার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX) ভালো।



Credit:
ginbits.com
কিন্তু ব্যাপারটা যদি এতই সোজা হতো, তাহলে কি আর এত এত ডিজাইনারের চাকরির বাজার থাকতো? 😉
আজ আমরা UX জগতের সবচেয়ে বড় এই ভুল ধারণাটি ভাঙব। আর এর জন্য আমরা টেকনোলজির দুনিয়া থেকে সোজা চলে যাব ঢাকার কোনো এক 'হাইপড' রেস্টুরেন্টে!
অভিযান: 'হাইপড' রেস্টুরেন্ট
ভাবুন, ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম জুড়ে একটা নতুন রেস্টুরেন্টের খুব নামডাক। খাবারের ছবি দেখলেই জিভে জল চলে আসে। আপনি আর আপনার বন্ধুরা মিলে ঠিক করলেন, আজ সন্ধ্যায় সেখানেই হানা দেবেন।
প্রথম ধাক্কা: খুঁজে পাওয়া (Findability) আপনারা ম্যাপ ধরে লোকেশনে তো গেলেন, কিন্তু রেস্টুরেন্ট খুঁজে পাচ্ছেন না। গলির ভেতরে কোনো সাইনবোর্ড নেই। দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করার পর তিনি এমনভাবে দেখালেন যেন তিনি নিজেই নিশ্চিত নন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে আপনারা একটা বিল্ডিংয়ের তিন তলায় তাকে খুঁজে পেলেন।
অভিজ্ঞতা: বিরক্তিকর।
দ্বিতীয় ধাক্কা: প্রবেশযোগ্যতা (Accessibility) বিল্ডিংয়ে কোনো লিফট নেই। আপনার এক বন্ধুর পায়ে হালকা ব্যথা, সিঁড়ি ভাঙতে তার বেশ কষ্টই হলো।
অভিজ্ঞতা: কষ্টদায়ক।
তৃতীয় ধাক্কা: আকাঙ্ক্ষা বনাম বাস্তবতা (Desirability) অনলাইনে ঝা-চকচকে ছবি দেখলেও বাস্তবে দেখলেন, জায়গাটা বেশ ছোট, গাদাগাদি পরিবেশ আর গোলমাল। ছবির সেই প্রিমিয়াম ফিলিংটা বাস্তবে নেই। মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল।
অভিজ্ঞতা: হতাশাজনক।
অবশেষে আসল কাজ: খাওয়া (Usability) যাই হোক, আপনারা বসলেন। টেবিলটা পরিষ্কার, চেয়ারগুলো আরামদায়ক। মেন্যু কার্ডটা সুন্দর এবং পড়তে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। ওয়েটার ভদ্রভাবে অর্ডার নিলেন এবং খাবার এলো। চামচ, প্লেট সবকিছু হাতের কাছেই আছে। অর্থাৎ, মূল যে কাজ—খাওয়া—সেটা আপনারা খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই করতে পারছেন। এটাই হলো ইউজেবিলিটি (Usability) বা ব্যবহারযোগ্যতা।
শেষ ধাক্কা: বিশ্বাসযোগ্যতা (Credibility) খাওয়া শেষে বিল দিতে গিয়ে দেখলেন, বিলে এমন একটা চার্জ যোগ করা হয়েছে যা মেন্যুতে লেখা ছিল না। ওয়েটারের সাথে কথা বলেও কোনো লাভ হলো না। আপনার মনে হলো, আপনাকে ঠকানো হয়েছে।
অভিজ্ঞতা: বিশ্বাস ভঙ্গ।
গল্পের শিক্ষাটা কী?
এবার পুরো ঘটনাটা একবার ভাবুন। রেস্টুরেন্টে আপনার মূল কাজ, অর্থাৎ 'খাওয়া' (Usability) কিন্তু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু আপনার পুরো অভিজ্ঞতাটা (User Experience) কি ভালো ছিল?
একদমই না!
কারণ রেস্টুরেন্টটা:
খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে (Findable ছিল না)।
সবার জন্য প্রবেশযোগ্য ছিল না (Accessible ছিল না)।
দেখতে আকর্ষণীয় ছিল না (Desirable ছিল না)।
এবং তারা বিশ্বাসযোগ্য ছিল না (Credible ছিল না)।
এই সবগুলো ফ্যাক্টর মিলেই তৈরি হয় আপনার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX)। UX ডিজাইনের কিংবদন্তী পিটার মরভিলের UX Honeycomb মডেলেও ঠিক এই কথাগুলোই বলা হয়েছে। ইউজেবিলিটি এই মডেলের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে মাত্র একটি অংশ।
ডিজিটাল প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কেমন?
এবার রেস্টুরেন্টের উদাহরণটা একটা অ্যাপের সাথে মেলান। ধরুন, একটা ই-কমার্স অ্যাপে আপনি খুব সহজেই প্রোডাক্ট কার্টে যোগ করতে পারছেন এবং অর্ডারও দিতে পারছেন (Usability ভালো)।
কিন্তু...
অ্যাপটা ওপেন হতেই এক মিনিট সময় নেয়।
প্রয়োজনের সময় কাস্টমার কেয়ারের নম্বর খুঁজে পাওয়া যায় না (Not Findable)।
অ্যাপের ডিজাইনটা বিশ্রী আর পুরনো (Not Desirable)।
পেমেন্টের সময় আপনার মনে হচ্ছে আপনার কার্ডের তথ্য সুরক্ষিত নয় (Not Credible)।
আপনি কি সেই অ্যাপটি আবার ব্যবহার করবেন? সম্ভবত না।
শেষ কথা
ইউজেবিলিটি হলো একটা গাড়ির ইঞ্জিনের মতো। ইঞ্জিন ছাড়া গাড়ি চলবে না, এটা সত্যি। কিন্তু গাড়ির সিট যদি আরামদায়ক না হয়, এসি যদি কাজ না করে, দেখতে যদি সুন্দর না হয়, আর ব্রেক যদি ফেল করে—তাহলে শুধু ভালো ইঞ্জিন দিয়ে কী হবে?
তেমনি, UX হলো একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ। এটি শুধু প্রোডাক্টটা ব্যবহার করা নিয়ে নয়; এটি ব্যবহার করার আগে, করার সময় এবং করার পরে আপনার মনে যে অনুভূতিটা তৈরি হয়, তা নিয়েই কাজ করে।
তাই পরেরবার থেকে শুধু 'ব্যবহার করা সহজ' কিনা তা না দেখে, পুরো অভিজ্ঞতাটা কেমন, তা নিয়ে ভাবুন।
কিন্তু ব্যাপারটা যদি এতই সোজা হতো, তাহলে কি আর এত এত ডিজাইনারের চাকরির বাজার থাকতো? 😉
আজ আমরা UX জগতের সবচেয়ে বড় এই ভুল ধারণাটি ভাঙব। আর এর জন্য আমরা টেকনোলজির দুনিয়া থেকে সোজা চলে যাব ঢাকার কোনো এক 'হাইপড' রেস্টুরেন্টে!
অভিযান: 'হাইপড' রেস্টুরেন্ট
ভাবুন, ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম জুড়ে একটা নতুন রেস্টুরেন্টের খুব নামডাক। খাবারের ছবি দেখলেই জিভে জল চলে আসে। আপনি আর আপনার বন্ধুরা মিলে ঠিক করলেন, আজ সন্ধ্যায় সেখানেই হানা দেবেন।
প্রথম ধাক্কা: খুঁজে পাওয়া (Findability) আপনারা ম্যাপ ধরে লোকেশনে তো গেলেন, কিন্তু রেস্টুরেন্ট খুঁজে পাচ্ছেন না। গলির ভেতরে কোনো সাইনবোর্ড নেই। দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করার পর তিনি এমনভাবে দেখালেন যেন তিনি নিজেই নিশ্চিত নন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে আপনারা একটা বিল্ডিংয়ের তিন তলায় তাকে খুঁজে পেলেন।
অভিজ্ঞতা: বিরক্তিকর।
দ্বিতীয় ধাক্কা: প্রবেশযোগ্যতা (Accessibility) বিল্ডিংয়ে কোনো লিফট নেই। আপনার এক বন্ধুর পায়ে হালকা ব্যথা, সিঁড়ি ভাঙতে তার বেশ কষ্টই হলো।
অভিজ্ঞতা: কষ্টদায়ক।
তৃতীয় ধাক্কা: আকাঙ্ক্ষা বনাম বাস্তবতা (Desirability) অনলাইনে ঝা-চকচকে ছবি দেখলেও বাস্তবে দেখলেন, জায়গাটা বেশ ছোট, গাদাগাদি পরিবেশ আর গোলমাল। ছবির সেই প্রিমিয়াম ফিলিংটা বাস্তবে নেই। মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল।
অভিজ্ঞতা: হতাশাজনক।
অবশেষে আসল কাজ: খাওয়া (Usability) যাই হোক, আপনারা বসলেন। টেবিলটা পরিষ্কার, চেয়ারগুলো আরামদায়ক। মেন্যু কার্ডটা সুন্দর এবং পড়তে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। ওয়েটার ভদ্রভাবে অর্ডার নিলেন এবং খাবার এলো। চামচ, প্লেট সবকিছু হাতের কাছেই আছে। অর্থাৎ, মূল যে কাজ—খাওয়া—সেটা আপনারা খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই করতে পারছেন। এটাই হলো ইউজেবিলিটি (Usability) বা ব্যবহারযোগ্যতা।
শেষ ধাক্কা: বিশ্বাসযোগ্যতা (Credibility) খাওয়া শেষে বিল দিতে গিয়ে দেখলেন, বিলে এমন একটা চার্জ যোগ করা হয়েছে যা মেন্যুতে লেখা ছিল না। ওয়েটারের সাথে কথা বলেও কোনো লাভ হলো না। আপনার মনে হলো, আপনাকে ঠকানো হয়েছে।
অভিজ্ঞতা: বিশ্বাস ভঙ্গ।
গল্পের শিক্ষাটা কী?
এবার পুরো ঘটনাটা একবার ভাবুন। রেস্টুরেন্টে আপনার মূল কাজ, অর্থাৎ 'খাওয়া' (Usability) কিন্তু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু আপনার পুরো অভিজ্ঞতাটা (User Experience) কি ভালো ছিল?
একদমই না!
কারণ রেস্টুরেন্টটা:
খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে (Findable ছিল না)।
সবার জন্য প্রবেশযোগ্য ছিল না (Accessible ছিল না)।
দেখতে আকর্ষণীয় ছিল না (Desirable ছিল না)।
এবং তারা বিশ্বাসযোগ্য ছিল না (Credible ছিল না)।
এই সবগুলো ফ্যাক্টর মিলেই তৈরি হয় আপনার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX)। UX ডিজাইনের কিংবদন্তী পিটার মরভিলের UX Honeycomb মডেলেও ঠিক এই কথাগুলোই বলা হয়েছে। ইউজেবিলিটি এই মডেলের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে মাত্র একটি অংশ।
ডিজিটাল প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কেমন?
এবার রেস্টুরেন্টের উদাহরণটা একটা অ্যাপের সাথে মেলান। ধরুন, একটা ই-কমার্স অ্যাপে আপনি খুব সহজেই প্রোডাক্ট কার্টে যোগ করতে পারছেন এবং অর্ডারও দিতে পারছেন (Usability ভালো)।
কিন্তু...
অ্যাপটা ওপেন হতেই এক মিনিট সময় নেয়।
প্রয়োজনের সময় কাস্টমার কেয়ারের নম্বর খুঁজে পাওয়া যায় না (Not Findable)।
অ্যাপের ডিজাইনটা বিশ্রী আর পুরনো (Not Desirable)।
পেমেন্টের সময় আপনার মনে হচ্ছে আপনার কার্ডের তথ্য সুরক্ষিত নয় (Not Credible)।
আপনি কি সেই অ্যাপটি আবার ব্যবহার করবেন? সম্ভবত না।
শেষ কথা
ইউজেবিলিটি হলো একটা গাড়ির ইঞ্জিনের মতো। ইঞ্জিন ছাড়া গাড়ি চলবে না, এটা সত্যি। কিন্তু গাড়ির সিট যদি আরামদায়ক না হয়, এসি যদি কাজ না করে, দেখতে যদি সুন্দর না হয়, আর ব্রেক যদি ফেল করে—তাহলে শুধু ভালো ইঞ্জিন দিয়ে কী হবে?
তেমনি, UX হলো একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ। এটি শুধু প্রোডাক্টটা ব্যবহার করা নিয়ে নয়; এটি ব্যবহার করার আগে, করার সময় এবং করার পরে আপনার মনে যে অনুভূতিটা তৈরি হয়, তা নিয়েই কাজ করে।
তাই পরেরবার থেকে শুধু 'ব্যবহার করা সহজ' কিনা তা না দেখে, পুরো অভিজ্ঞতাটা কেমন, তা নিয়ে ভাবুন।
কিন্তু ব্যাপারটা যদি এতই সোজা হতো, তাহলে কি আর এত এত ডিজাইনারের চাকরির বাজার থাকতো? 😉
আজ আমরা UX জগতের সবচেয়ে বড় এই ভুল ধারণাটি ভাঙব। আর এর জন্য আমরা টেকনোলজির দুনিয়া থেকে সোজা চলে যাব ঢাকার কোনো এক 'হাইপড' রেস্টুরেন্টে!
অভিযান: 'হাইপড' রেস্টুরেন্ট
ভাবুন, ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম জুড়ে একটা নতুন রেস্টুরেন্টের খুব নামডাক। খাবারের ছবি দেখলেই জিভে জল চলে আসে। আপনি আর আপনার বন্ধুরা মিলে ঠিক করলেন, আজ সন্ধ্যায় সেখানেই হানা দেবেন।
প্রথম ধাক্কা: খুঁজে পাওয়া (Findability) আপনারা ম্যাপ ধরে লোকেশনে তো গেলেন, কিন্তু রেস্টুরেন্ট খুঁজে পাচ্ছেন না। গলির ভেতরে কোনো সাইনবোর্ড নেই। দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করার পর তিনি এমনভাবে দেখালেন যেন তিনি নিজেই নিশ্চিত নন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে আপনারা একটা বিল্ডিংয়ের তিন তলায় তাকে খুঁজে পেলেন।
অভিজ্ঞতা: বিরক্তিকর।
দ্বিতীয় ধাক্কা: প্রবেশযোগ্যতা (Accessibility) বিল্ডিংয়ে কোনো লিফট নেই। আপনার এক বন্ধুর পায়ে হালকা ব্যথা, সিঁড়ি ভাঙতে তার বেশ কষ্টই হলো।
অভিজ্ঞতা: কষ্টদায়ক।
তৃতীয় ধাক্কা: আকাঙ্ক্ষা বনাম বাস্তবতা (Desirability) অনলাইনে ঝা-চকচকে ছবি দেখলেও বাস্তবে দেখলেন, জায়গাটা বেশ ছোট, গাদাগাদি পরিবেশ আর গোলমাল। ছবির সেই প্রিমিয়াম ফিলিংটা বাস্তবে নেই। মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল।
অভিজ্ঞতা: হতাশাজনক।
অবশেষে আসল কাজ: খাওয়া (Usability) যাই হোক, আপনারা বসলেন। টেবিলটা পরিষ্কার, চেয়ারগুলো আরামদায়ক। মেন্যু কার্ডটা সুন্দর এবং পড়তে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। ওয়েটার ভদ্রভাবে অর্ডার নিলেন এবং খাবার এলো। চামচ, প্লেট সবকিছু হাতের কাছেই আছে। অর্থাৎ, মূল যে কাজ—খাওয়া—সেটা আপনারা খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই করতে পারছেন। এটাই হলো ইউজেবিলিটি (Usability) বা ব্যবহারযোগ্যতা।
শেষ ধাক্কা: বিশ্বাসযোগ্যতা (Credibility) খাওয়া শেষে বিল দিতে গিয়ে দেখলেন, বিলে এমন একটা চার্জ যোগ করা হয়েছে যা মেন্যুতে লেখা ছিল না। ওয়েটারের সাথে কথা বলেও কোনো লাভ হলো না। আপনার মনে হলো, আপনাকে ঠকানো হয়েছে।
অভিজ্ঞতা: বিশ্বাস ভঙ্গ।
গল্পের শিক্ষাটা কী?
এবার পুরো ঘটনাটা একবার ভাবুন। রেস্টুরেন্টে আপনার মূল কাজ, অর্থাৎ 'খাওয়া' (Usability) কিন্তু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু আপনার পুরো অভিজ্ঞতাটা (User Experience) কি ভালো ছিল?
একদমই না!
কারণ রেস্টুরেন্টটা:
খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে (Findable ছিল না)।
সবার জন্য প্রবেশযোগ্য ছিল না (Accessible ছিল না)।
দেখতে আকর্ষণীয় ছিল না (Desirable ছিল না)।
এবং তারা বিশ্বাসযোগ্য ছিল না (Credible ছিল না)।
এই সবগুলো ফ্যাক্টর মিলেই তৈরি হয় আপনার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX)। UX ডিজাইনের কিংবদন্তী পিটার মরভিলের UX Honeycomb মডেলেও ঠিক এই কথাগুলোই বলা হয়েছে। ইউজেবিলিটি এই মডেলের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে মাত্র একটি অংশ।
ডিজিটাল প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কেমন?
এবার রেস্টুরেন্টের উদাহরণটা একটা অ্যাপের সাথে মেলান। ধরুন, একটা ই-কমার্স অ্যাপে আপনি খুব সহজেই প্রোডাক্ট কার্টে যোগ করতে পারছেন এবং অর্ডারও দিতে পারছেন (Usability ভালো)।
কিন্তু...
অ্যাপটা ওপেন হতেই এক মিনিট সময় নেয়।
প্রয়োজনের সময় কাস্টমার কেয়ারের নম্বর খুঁজে পাওয়া যায় না (Not Findable)।
অ্যাপের ডিজাইনটা বিশ্রী আর পুরনো (Not Desirable)।
পেমেন্টের সময় আপনার মনে হচ্ছে আপনার কার্ডের তথ্য সুরক্ষিত নয় (Not Credible)।
আপনি কি সেই অ্যাপটি আবার ব্যবহার করবেন? সম্ভবত না।
শেষ কথা
ইউজেবিলিটি হলো একটা গাড়ির ইঞ্জিনের মতো। ইঞ্জিন ছাড়া গাড়ি চলবে না, এটা সত্যি। কিন্তু গাড়ির সিট যদি আরামদায়ক না হয়, এসি যদি কাজ না করে, দেখতে যদি সুন্দর না হয়, আর ব্রেক যদি ফেল করে—তাহলে শুধু ভালো ইঞ্জিন দিয়ে কী হবে?
তেমনি, UX হলো একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ। এটি শুধু প্রোডাক্টটা ব্যবহার করা নিয়ে নয়; এটি ব্যবহার করার আগে, করার সময় এবং করার পরে আপনার মনে যে অনুভূতিটা তৈরি হয়, তা নিয়েই কাজ করে।
তাই পরেরবার থেকে শুধু 'ব্যবহার করা সহজ' কিনা তা না দেখে, পুরো অভিজ্ঞতাটা কেমন, তা নিয়ে ভাবুন।
এইসব লেখা নিয়ে কি একটা নিউজলেটার চালু করা উচিত?
মেইলে জানাতে পারেন, ভালো সাড়া পেলে শুরু করতে পারি!