UX Myths (পর্ব ১০): Accessible সাইট কি দেখতে অসুন্দর হয়?
"আমি আমার ওয়েবসাইটের জন্য অসাধারণ, শৈল্পিক একটি ডিজাইন তৈরি করেছি। কালার প্যালেট, ফন্ট, লেআউট—সবকিছু একদম পারফেক্ট! কিন্তু ক্লায়েন্ট এখন এটাকে 'অ্যাক্সেসিবল' (Accessible) বা সকলের জন্য ব্যবহারযোগ্য করতে বলছে। সর্বনাশ! এখন আমাকে বড় বড় বিদঘুটে ফন্ট, হাই-কন্ট্রাস্টের ক্যাটক্যাটে রঙ ব্যবহার করতে হবে। আমার শৈল্পিক ডিজাইনের তো বারোটা বেজে যাবে!"



Credit:
Alessandro Giammaria (modified)
এই ভয় থেকেই জন্ম নিয়েছে ডিজাইন জগতের এক বিরাট মিথ: "অ্যাক্সেসিবল ওয়েবসাইটগুলো দেখতে সাদামাটা, বিশ্রী এবং অসুন্দর হয়।"
কিন্তু সত্যিটা হলো, এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। অ্যাক্সেসিবিলিটি (সকলের জন্য ব্যবহারযোগ্যতা) এবং এসথেটিকস (নান্দনিকতা) শত্রু নয়, বরং একে অপরের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারে। একটি সাইট একই সাথে দৃষ্টিনন্দন এবং সকলের জন্য সহজলভ্য হওয়া সম্ভব।
এই ভুল ধারণাটি ভাঙতে আজ আমরা ওয়েব ডিজাইন ছেড়ে একটু আধুনিক স্থাপত্য বা আর্কিটেকচারের দিকে তাকাবো।
গল্প: একটি বিল্ডিং এবং একটি র্যাম্পের
ভাবুন, আপনি একজন স্থপতি এবং আপনি ঢাকার গুলশানে একটি চমৎকার, আধুনিক কমার্শিয়াল বিল্ডিং ডিজাইন করেছেন। এখন আপনাকে বলা হলো, এই বিল্ডিংয়ে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের প্রবেশের জন্য একটি র্যাম্প (Ramp) বা ঢালু পথ যোগ করতে হবে।
দৃশ্যকল্প ১: জোড়াতালির অসুন্দর সমাধান (মিথটির প্রয়োগ) একজন অদক্ষ বা অমনোযোগী ডিজাইনার হয়তো বিল্ডিংয়ের মূল সৌন্দর্য, অর্থাৎ তার চমৎকার সিঁড়ির ডিজাইনটাকে অপরিবর্তিত রেখে, পাশে কোনোমতে একটা খাড়া, স্টিলের র্যাম্প জুড়ে দেবেন। এটা দেখতে বেখাপ্পা লাগবে এবং বিল্ডিংয়ের পুরো নান্দনিকতাই নষ্ট করে দেবে। এটা দেখেই আপনার মনে হবে, "ধুর! এই অ্যাক্সেসিবিলিটি বা র্যাম্পের কারণেই সব অসুন্দর লাগছে।"
দৃশ্যকল্প ২: শৈল্পিক এবং সমন্বিত সমাধান (বাস্তবতা) কিন্তু একজন দক্ষ ও আধুনিক স্থপতি কী করবেন? তিনি র্যাম্পটিকে একটি 'বাড়তি' বা 'বোঝা' হিসেবে না ভেবে, মূল ডিজাইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখবেন। তিনি হয়তো র্যাম্পটিকে বিল্ডিংয়ের চারপাশে একটি চমৎকার, প্রবাহিত পথের মতো করে ডিজাইন করবেন, যেখানে সুন্দর রেলিং থাকবে, পাশে ছোট ছোট গাছপালা থাকবে, মনোমুগ্ধকর আলো থাকবে। এই র্যাম্পটি তখন আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, বরং বিল্ডিংয়ের আধুনিক এবং মানবিক সৌন্দর্যকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে।
গল্পের শিক্ষা: সমস্যাটা র্যাম্পের (অ্যাক্সেসিবিলিটির) নয়, সমস্যাটা ডিজাইনারের দক্ষতার এবং চিন্তাভাবনার। ওয়েবসাইটও ঠিক একই রকম। অ্যাক্সেসিবিলিটি আপনার ডিজাইনকে অসুন্দর করে না; অদক্ষভাবে এবং জোড়াতালি দিয়ে প্রয়োগ করা অ্যাক্সেসিবিলিটি ডিজাইনকে অসুন্দর করে।
অ্যাক্সেসিবিলিটি যেভাবে সবার জন্যই ডিজাইনকে সুন্দর করে
মজার ব্যাপার হলো, অ্যাক্সেসিবিলিটির অনেক নিয়মই শুধু বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য নয়, বরং সব ধরনের ব্যবহারকারীর জন্যই ডিজাইনকে উন্নত এবং ব্যবহারবান্ধব করে। যেমন:
ভালো কনট্রাস্ট (Good Contrast): হাই-কন্ট্রাস্ট রঙ শুধু স্বল্পদৃষ্টির মানুষের জন্যই ভালো নয়; যারা কড়া রোদের নিচে বা কম আলোতে মোবাইলে আপনার সাইট দেখছে, তাদের জন্যও এটি একটি আশীর্বাদ।
পড়তে সুবিধা (Readability): বড় এবং পরিষ্কার ফন্ট শুধু বয়স্কদের জন্যই নয়; এটি যেকোনো ব্যবহারকারীর জন্যই কনটেন্ট পড়া এবং হজম করাকে আরামদায়ক করে তোলে।
ভিডিওতে ক্যাপশন (Captions on Videos): ভিডিওর নিচে ক্যাপশন শুধু যারা কানে শুনতে পান না তাদের জন্যই অপরিহার্য নয়; যারা বাসের ভিড়ে, লাইব্রেরিতে বা অফিসের মিটিং-এ সাইলেন্ট মোডে ভিডিও দেখতে চায়, তাদের জন্যও এটি জীবন বাঁচানোর মতো একটি ফিচার।
শেষ কথা: অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজাইনই সেরা ডিজাইন
অ্যাক্সেসিবিলিটিকে একটি বিরক্তিকর চেকলিস্ট বা সৃজনশীলতার পথে বাধা হিসেবে না দেখে, এটিকে সৃজনশীলতার একটি নতুন সুযোগ হিসেবে দেখুন। এটি আপনার ডিজাইনকে আরও মানবিক, চিন্তাশীল এবং দিনশেষে আরও বেশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
একটি বিল্ডিং-এ র্যাম্প থাকা মানে শুধু হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর সুবিধা নয়; এটি একজন শিশু স্ট্রলার নিয়ে যাওয়া মা, বা ভারী স্যুটকেস টেনে নিয়ে যাওয়া পর্যটকের জন্যও সুবিধাজনক। ঠিক তেমনি, একটি অ্যাক্সেসিবল ওয়েবসাইট সকলের জন্যই একটি ভালো অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন: আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে সেই বেখাপ্পা, জোড়াতালি দেওয়া র্যাম্পওয়ালা বিল্ডিং বানাতে চান, নাকি সেই দৃষ্টিনন্দন, আধুনিক স্থাপত্য বানাতে চান যেখানে র্যাম্প নিজেই একটি শিল্পকর্ম?
সিদ্ধান্ত আপনার।
এই ভয় থেকেই জন্ম নিয়েছে ডিজাইন জগতের এক বিরাট মিথ: "অ্যাক্সেসিবল ওয়েবসাইটগুলো দেখতে সাদামাটা, বিশ্রী এবং অসুন্দর হয়।"
কিন্তু সত্যিটা হলো, এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। অ্যাক্সেসিবিলিটি (সকলের জন্য ব্যবহারযোগ্যতা) এবং এসথেটিকস (নান্দনিকতা) শত্রু নয়, বরং একে অপরের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারে। একটি সাইট একই সাথে দৃষ্টিনন্দন এবং সকলের জন্য সহজলভ্য হওয়া সম্ভব।
এই ভুল ধারণাটি ভাঙতে আজ আমরা ওয়েব ডিজাইন ছেড়ে একটু আধুনিক স্থাপত্য বা আর্কিটেকচারের দিকে তাকাবো।
গল্প: একটি বিল্ডিং এবং একটি র্যাম্পের
ভাবুন, আপনি একজন স্থপতি এবং আপনি ঢাকার গুলশানে একটি চমৎকার, আধুনিক কমার্শিয়াল বিল্ডিং ডিজাইন করেছেন। এখন আপনাকে বলা হলো, এই বিল্ডিংয়ে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের প্রবেশের জন্য একটি র্যাম্প (Ramp) বা ঢালু পথ যোগ করতে হবে।
দৃশ্যকল্প ১: জোড়াতালির অসুন্দর সমাধান (মিথটির প্রয়োগ) একজন অদক্ষ বা অমনোযোগী ডিজাইনার হয়তো বিল্ডিংয়ের মূল সৌন্দর্য, অর্থাৎ তার চমৎকার সিঁড়ির ডিজাইনটাকে অপরিবর্তিত রেখে, পাশে কোনোমতে একটা খাড়া, স্টিলের র্যাম্প জুড়ে দেবেন। এটা দেখতে বেখাপ্পা লাগবে এবং বিল্ডিংয়ের পুরো নান্দনিকতাই নষ্ট করে দেবে। এটা দেখেই আপনার মনে হবে, "ধুর! এই অ্যাক্সেসিবিলিটি বা র্যাম্পের কারণেই সব অসুন্দর লাগছে।"
দৃশ্যকল্প ২: শৈল্পিক এবং সমন্বিত সমাধান (বাস্তবতা) কিন্তু একজন দক্ষ ও আধুনিক স্থপতি কী করবেন? তিনি র্যাম্পটিকে একটি 'বাড়তি' বা 'বোঝা' হিসেবে না ভেবে, মূল ডিজাইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখবেন। তিনি হয়তো র্যাম্পটিকে বিল্ডিংয়ের চারপাশে একটি চমৎকার, প্রবাহিত পথের মতো করে ডিজাইন করবেন, যেখানে সুন্দর রেলিং থাকবে, পাশে ছোট ছোট গাছপালা থাকবে, মনোমুগ্ধকর আলো থাকবে। এই র্যাম্পটি তখন আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, বরং বিল্ডিংয়ের আধুনিক এবং মানবিক সৌন্দর্যকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে।
গল্পের শিক্ষা: সমস্যাটা র্যাম্পের (অ্যাক্সেসিবিলিটির) নয়, সমস্যাটা ডিজাইনারের দক্ষতার এবং চিন্তাভাবনার। ওয়েবসাইটও ঠিক একই রকম। অ্যাক্সেসিবিলিটি আপনার ডিজাইনকে অসুন্দর করে না; অদক্ষভাবে এবং জোড়াতালি দিয়ে প্রয়োগ করা অ্যাক্সেসিবিলিটি ডিজাইনকে অসুন্দর করে।
অ্যাক্সেসিবিলিটি যেভাবে সবার জন্যই ডিজাইনকে সুন্দর করে
মজার ব্যাপার হলো, অ্যাক্সেসিবিলিটির অনেক নিয়মই শুধু বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য নয়, বরং সব ধরনের ব্যবহারকারীর জন্যই ডিজাইনকে উন্নত এবং ব্যবহারবান্ধব করে। যেমন:
ভালো কনট্রাস্ট (Good Contrast): হাই-কন্ট্রাস্ট রঙ শুধু স্বল্পদৃষ্টির মানুষের জন্যই ভালো নয়; যারা কড়া রোদের নিচে বা কম আলোতে মোবাইলে আপনার সাইট দেখছে, তাদের জন্যও এটি একটি আশীর্বাদ।
পড়তে সুবিধা (Readability): বড় এবং পরিষ্কার ফন্ট শুধু বয়স্কদের জন্যই নয়; এটি যেকোনো ব্যবহারকারীর জন্যই কনটেন্ট পড়া এবং হজম করাকে আরামদায়ক করে তোলে।
ভিডিওতে ক্যাপশন (Captions on Videos): ভিডিওর নিচে ক্যাপশন শুধু যারা কানে শুনতে পান না তাদের জন্যই অপরিহার্য নয়; যারা বাসের ভিড়ে, লাইব্রেরিতে বা অফিসের মিটিং-এ সাইলেন্ট মোডে ভিডিও দেখতে চায়, তাদের জন্যও এটি জীবন বাঁচানোর মতো একটি ফিচার।
শেষ কথা: অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজাইনই সেরা ডিজাইন
অ্যাক্সেসিবিলিটিকে একটি বিরক্তিকর চেকলিস্ট বা সৃজনশীলতার পথে বাধা হিসেবে না দেখে, এটিকে সৃজনশীলতার একটি নতুন সুযোগ হিসেবে দেখুন। এটি আপনার ডিজাইনকে আরও মানবিক, চিন্তাশীল এবং দিনশেষে আরও বেশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
একটি বিল্ডিং-এ র্যাম্প থাকা মানে শুধু হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর সুবিধা নয়; এটি একজন শিশু স্ট্রলার নিয়ে যাওয়া মা, বা ভারী স্যুটকেস টেনে নিয়ে যাওয়া পর্যটকের জন্যও সুবিধাজনক। ঠিক তেমনি, একটি অ্যাক্সেসিবল ওয়েবসাইট সকলের জন্যই একটি ভালো অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন: আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে সেই বেখাপ্পা, জোড়াতালি দেওয়া র্যাম্পওয়ালা বিল্ডিং বানাতে চান, নাকি সেই দৃষ্টিনন্দন, আধুনিক স্থাপত্য বানাতে চান যেখানে র্যাম্প নিজেই একটি শিল্পকর্ম?
সিদ্ধান্ত আপনার।
এই ভয় থেকেই জন্ম নিয়েছে ডিজাইন জগতের এক বিরাট মিথ: "অ্যাক্সেসিবল ওয়েবসাইটগুলো দেখতে সাদামাটা, বিশ্রী এবং অসুন্দর হয়।"
কিন্তু সত্যিটা হলো, এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। অ্যাক্সেসিবিলিটি (সকলের জন্য ব্যবহারযোগ্যতা) এবং এসথেটিকস (নান্দনিকতা) শত্রু নয়, বরং একে অপরের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারে। একটি সাইট একই সাথে দৃষ্টিনন্দন এবং সকলের জন্য সহজলভ্য হওয়া সম্ভব।
এই ভুল ধারণাটি ভাঙতে আজ আমরা ওয়েব ডিজাইন ছেড়ে একটু আধুনিক স্থাপত্য বা আর্কিটেকচারের দিকে তাকাবো।
গল্প: একটি বিল্ডিং এবং একটি র্যাম্পের
ভাবুন, আপনি একজন স্থপতি এবং আপনি ঢাকার গুলশানে একটি চমৎকার, আধুনিক কমার্শিয়াল বিল্ডিং ডিজাইন করেছেন। এখন আপনাকে বলা হলো, এই বিল্ডিংয়ে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের প্রবেশের জন্য একটি র্যাম্প (Ramp) বা ঢালু পথ যোগ করতে হবে।
দৃশ্যকল্প ১: জোড়াতালির অসুন্দর সমাধান (মিথটির প্রয়োগ) একজন অদক্ষ বা অমনোযোগী ডিজাইনার হয়তো বিল্ডিংয়ের মূল সৌন্দর্য, অর্থাৎ তার চমৎকার সিঁড়ির ডিজাইনটাকে অপরিবর্তিত রেখে, পাশে কোনোমতে একটা খাড়া, স্টিলের র্যাম্প জুড়ে দেবেন। এটা দেখতে বেখাপ্পা লাগবে এবং বিল্ডিংয়ের পুরো নান্দনিকতাই নষ্ট করে দেবে। এটা দেখেই আপনার মনে হবে, "ধুর! এই অ্যাক্সেসিবিলিটি বা র্যাম্পের কারণেই সব অসুন্দর লাগছে।"
দৃশ্যকল্প ২: শৈল্পিক এবং সমন্বিত সমাধান (বাস্তবতা) কিন্তু একজন দক্ষ ও আধুনিক স্থপতি কী করবেন? তিনি র্যাম্পটিকে একটি 'বাড়তি' বা 'বোঝা' হিসেবে না ভেবে, মূল ডিজাইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখবেন। তিনি হয়তো র্যাম্পটিকে বিল্ডিংয়ের চারপাশে একটি চমৎকার, প্রবাহিত পথের মতো করে ডিজাইন করবেন, যেখানে সুন্দর রেলিং থাকবে, পাশে ছোট ছোট গাছপালা থাকবে, মনোমুগ্ধকর আলো থাকবে। এই র্যাম্পটি তখন আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, বরং বিল্ডিংয়ের আধুনিক এবং মানবিক সৌন্দর্যকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে।
গল্পের শিক্ষা: সমস্যাটা র্যাম্পের (অ্যাক্সেসিবিলিটির) নয়, সমস্যাটা ডিজাইনারের দক্ষতার এবং চিন্তাভাবনার। ওয়েবসাইটও ঠিক একই রকম। অ্যাক্সেসিবিলিটি আপনার ডিজাইনকে অসুন্দর করে না; অদক্ষভাবে এবং জোড়াতালি দিয়ে প্রয়োগ করা অ্যাক্সেসিবিলিটি ডিজাইনকে অসুন্দর করে।
অ্যাক্সেসিবিলিটি যেভাবে সবার জন্যই ডিজাইনকে সুন্দর করে
মজার ব্যাপার হলো, অ্যাক্সেসিবিলিটির অনেক নিয়মই শুধু বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য নয়, বরং সব ধরনের ব্যবহারকারীর জন্যই ডিজাইনকে উন্নত এবং ব্যবহারবান্ধব করে। যেমন:
ভালো কনট্রাস্ট (Good Contrast): হাই-কন্ট্রাস্ট রঙ শুধু স্বল্পদৃষ্টির মানুষের জন্যই ভালো নয়; যারা কড়া রোদের নিচে বা কম আলোতে মোবাইলে আপনার সাইট দেখছে, তাদের জন্যও এটি একটি আশীর্বাদ।
পড়তে সুবিধা (Readability): বড় এবং পরিষ্কার ফন্ট শুধু বয়স্কদের জন্যই নয়; এটি যেকোনো ব্যবহারকারীর জন্যই কনটেন্ট পড়া এবং হজম করাকে আরামদায়ক করে তোলে।
ভিডিওতে ক্যাপশন (Captions on Videos): ভিডিওর নিচে ক্যাপশন শুধু যারা কানে শুনতে পান না তাদের জন্যই অপরিহার্য নয়; যারা বাসের ভিড়ে, লাইব্রেরিতে বা অফিসের মিটিং-এ সাইলেন্ট মোডে ভিডিও দেখতে চায়, তাদের জন্যও এটি জীবন বাঁচানোর মতো একটি ফিচার।
শেষ কথা: অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজাইনই সেরা ডিজাইন
অ্যাক্সেসিবিলিটিকে একটি বিরক্তিকর চেকলিস্ট বা সৃজনশীলতার পথে বাধা হিসেবে না দেখে, এটিকে সৃজনশীলতার একটি নতুন সুযোগ হিসেবে দেখুন। এটি আপনার ডিজাইনকে আরও মানবিক, চিন্তাশীল এবং দিনশেষে আরও বেশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
একটি বিল্ডিং-এ র্যাম্প থাকা মানে শুধু হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর সুবিধা নয়; এটি একজন শিশু স্ট্রলার নিয়ে যাওয়া মা, বা ভারী স্যুটকেস টেনে নিয়ে যাওয়া পর্যটকের জন্যও সুবিধাজনক। ঠিক তেমনি, একটি অ্যাক্সেসিবল ওয়েবসাইট সকলের জন্যই একটি ভালো অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন: আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে সেই বেখাপ্পা, জোড়াতালি দেওয়া র্যাম্পওয়ালা বিল্ডিং বানাতে চান, নাকি সেই দৃষ্টিনন্দন, আধুনিক স্থাপত্য বানাতে চান যেখানে র্যাম্প নিজেই একটি শিল্পকর্ম?
সিদ্ধান্ত আপনার।
এইসব লেখা নিয়ে কি একটা নিউজলেটার চালু করা উচিত?
মেইলে জানাতে পারেন, ভালো সাড়া পেলে শুরু করতে পারি!