UX Myths (পর্ব ৩): কাজ চললেই হলো, সৌন্দর্য দিয়ে কী হবে?
"ভাই, আমার অ্যাপ কাজ করে, বাটন ক্লিক করলে যা হওয়ার কথা ঠিক তাই হয়। এখন এটা দেখতে সুন্দর না অসুন্দর, তাতে কী আসে যায়?"



Credit:
Medium
ইঞ্জিনিয়ার বা ডেভেলপার বন্ধুদের আড্ডায় এই কথাটা একবারও শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। এই 'কাজ চললেই হলো' সিনড্রোম UX জগতের একটি বিরাট মিথ। অনেকেই মনে করেন, একটা প্রোডাক্টের ইউজেবিলিটি (Usability) বা ব্যবহারযোগ্যতা যদি দুর্দান্ত হয়, তাহলে তার সৌন্দর্য বা Aesthetics নিয়ে বাড়তি সময় এবং অর্থ নষ্ট করার কোনো দরকার নেই।
কিন্তু এই ধারণাটা যে কতটা ভুল, তা প্রমাণ করার জন্য আজ আমরা কোনো জটিল টেকনোলজি নিয়ে কথা বলব না। আজ আমাদের আলোচনার বিষয়: এক প্লেট গরম ভাত আর আলু ভর্তা!
দৃশ্যপট ১: 'কাজ চালানো' প্লেট
ভাবুন, আপনি সারাদিন পর প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। আপনাকে এক প্লেটে খাবার দেওয়া হলো। প্লেটে ভাতগুলো ছড়ানো ছিটানো, তার উপর ডাল ঢেলে দেওয়ায় সবকিছু কেমন মাখামাখি হয়ে আছে, আর পাশে আলু ভর্তাটা যেন কেউ দায়সারাভাবে ফেলে রেখেছে।
আপনি কি এটা খেতে পারবেন? হ্যাঁ, অবশ্যই পারবেন। এর পুষ্টিগুণও ঠিক আছে, আপনার পেটও ভরবে। অর্থাৎ, এর ইউজেবিলিটি বা ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
দৃশ্যপট ২: 'মন ভালো করা' প্লেট
এবার ভাবুন, আপনাকে ঠিক একই খাবারগুলো আবার দেওয়া হলো। কিন্তু এবার scénarioটা ভিন্ন:
গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতটা একটা বাটির মাপে সুন্দর করে গোল করে প্লেটের একপাশে রাখা।
পাশে একটা ছোট বাটিতে ঘন ডাল।
তার পাশে নিখুঁতভাবে গোল করা আলু ভর্তার উপর একটা ভাজা শুকনা মরিচ আর সাথে এক টুকরো লেবু আর দুটো পেঁয়াজ কুচি।
দেখেই কেমন একটা যত্ন আর ভালোবাসার অনুভূতি হচ্ছে, তাই না?
প্রশ্ন এবং আসল রহস্য
কোন প্লেটটা দেখে আপনার খেতে বেশি ইচ্ছে করবে? কোন খাবারটাকে আপনার বেশি সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর আর মানসম্মত মনে হবে?
আমি নিশ্চিত, আপনার উত্তর দ্বিতীয়টা। যদিও দুটি প্লেটেই খাবার কিন্তু একই ছিল!
UX-এর দুনিয়ায় এই জাদুকরী ঘটনাটাকে বলা হয় "Aesthetic-Usability Effect"। এর সহজ অর্থ হলো, মানুষ সুন্দর দেখতে ডিজাইনকে সহজাতভাবেই বেশি সহজ এবং কার্যকর (usable) বলে মনে করে।
এর কারণগুলো হলো:
প্রথম দর্শনেই প্রেম (First Impression): সুন্দর ডিজাইন প্রথম দেখাতেই ব্যবহারকারীর মনে একটি ইতিবাচক ধারণা ও বিশ্বাস তৈরি করে। আলু ভর্তার সুন্দর প্লেটটা দেখেই যেমন আপনার মনে হয়েছে, "যে রেঁধেছে সে খুবই যত্নশীল।"
ধৈর্য ও ক্ষমা (Patience & Forgiveness): মানুষ সুন্দর ডিজাইনের ছোটখাটো ভুলত্রুটি (যেমন: একটা বাটন লোড হতে একটু দেরি হওয়া) অনেক সহজে ক্ষমা করে দেয়। কিন্তু একটা দেখতে অসুন্দর ও জগাখিচুড়ি সাইটের ক্ষেত্রে তাদের ধৈর্য থাকে শূন্যের কোঠায়। ওই যে, 'সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র!' 😉
আনন্দ (Pleasure): সুন্দর জিনিস ব্যবহার করতে আমাদের ভালো লাগে। এই ইতিবাচক অনুভূতিটা পুরো অভিজ্ঞতাকেই আনন্দদায়ক করে তোলে এবং ব্যবহারকারীকে বারবার ফিরে আসতে উৎসাহিত করে।
বাস্তব জীবনের উদাহরণ
ঢাকার রাস্তার কথাই ভাবুন। একটি লোকাল বাস আর Pathao বা Uber-এর একটি পরিষ্কার সেডান গাড়ি—দুটোই আপনাকে ফার্মগেট থেকে মতিঝিল পৌঁছে দেবে। দুটোরই ইউজেবিলিটি আছে।
কিন্তু বাসের ভাঙা সিট, ময়লা পরিবেশের বদলে আপনি কেন একটি এয়ার-কন্ডিশন্ড, পরিষ্কার গাড়িতে যেতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন এবং তার জন্য হাসিমুখে অতিরিক্ত টাকা খরচ করেন?
কারণ এর Aesthetics বা নান্দনিকতা আপনার পুরো অভিজ্ঞতাকে (User Experience) অনেক বেশি আরামদায়ক ও আনন্দদায়ক করে তোলে।
শেষ কথা
ইউজেবিলিটি হলো একটি প্রোডাক্টের কঙ্কাল—অত্যাবশ্যকীয়, কিন্তু একা যথেষ্ট নয়। আর এসথেটিকস হলো সেই কঙ্কালের উপরের সুন্দর চামড়া, পোশাক এবং সাজসজ্জা, যা তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ, আকর্ষণীয় এবং জীবন্ত রূপ দেয়।
শুধু কঙ্কাল দিয়ে হয়তো কাজ চলে, কিন্তু তাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না।
তাই পরেরবার যখন কোনো ডিজাইন বানাবেন বা বিচার করবেন, তখন শুধু "এটা কাজ করে কি না?"—তা না ভেবে, নিজেকে প্রশ্ন করুন: "এটা কি সেই তালগোল পাকানো ভাতের প্লেট, নাকি যত্ন করে সাজানো রাজকীয় প্লেট?"
আপনার ব্যবহারকারীরা কিন্তু এই যত্নটুকুই সারাজীবন মনে রাখবে।
ইঞ্জিনিয়ার বা ডেভেলপার বন্ধুদের আড্ডায় এই কথাটা একবারও শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। এই 'কাজ চললেই হলো' সিনড্রোম UX জগতের একটি বিরাট মিথ। অনেকেই মনে করেন, একটা প্রোডাক্টের ইউজেবিলিটি (Usability) বা ব্যবহারযোগ্যতা যদি দুর্দান্ত হয়, তাহলে তার সৌন্দর্য বা Aesthetics নিয়ে বাড়তি সময় এবং অর্থ নষ্ট করার কোনো দরকার নেই।
কিন্তু এই ধারণাটা যে কতটা ভুল, তা প্রমাণ করার জন্য আজ আমরা কোনো জটিল টেকনোলজি নিয়ে কথা বলব না। আজ আমাদের আলোচনার বিষয়: এক প্লেট গরম ভাত আর আলু ভর্তা!
দৃশ্যপট ১: 'কাজ চালানো' প্লেট
ভাবুন, আপনি সারাদিন পর প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। আপনাকে এক প্লেটে খাবার দেওয়া হলো। প্লেটে ভাতগুলো ছড়ানো ছিটানো, তার উপর ডাল ঢেলে দেওয়ায় সবকিছু কেমন মাখামাখি হয়ে আছে, আর পাশে আলু ভর্তাটা যেন কেউ দায়সারাভাবে ফেলে রেখেছে।
আপনি কি এটা খেতে পারবেন? হ্যাঁ, অবশ্যই পারবেন। এর পুষ্টিগুণও ঠিক আছে, আপনার পেটও ভরবে। অর্থাৎ, এর ইউজেবিলিটি বা ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
দৃশ্যপট ২: 'মন ভালো করা' প্লেট
এবার ভাবুন, আপনাকে ঠিক একই খাবারগুলো আবার দেওয়া হলো। কিন্তু এবার scénarioটা ভিন্ন:
গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতটা একটা বাটির মাপে সুন্দর করে গোল করে প্লেটের একপাশে রাখা।
পাশে একটা ছোট বাটিতে ঘন ডাল।
তার পাশে নিখুঁতভাবে গোল করা আলু ভর্তার উপর একটা ভাজা শুকনা মরিচ আর সাথে এক টুকরো লেবু আর দুটো পেঁয়াজ কুচি।
দেখেই কেমন একটা যত্ন আর ভালোবাসার অনুভূতি হচ্ছে, তাই না?
প্রশ্ন এবং আসল রহস্য
কোন প্লেটটা দেখে আপনার খেতে বেশি ইচ্ছে করবে? কোন খাবারটাকে আপনার বেশি সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর আর মানসম্মত মনে হবে?
আমি নিশ্চিত, আপনার উত্তর দ্বিতীয়টা। যদিও দুটি প্লেটেই খাবার কিন্তু একই ছিল!
UX-এর দুনিয়ায় এই জাদুকরী ঘটনাটাকে বলা হয় "Aesthetic-Usability Effect"। এর সহজ অর্থ হলো, মানুষ সুন্দর দেখতে ডিজাইনকে সহজাতভাবেই বেশি সহজ এবং কার্যকর (usable) বলে মনে করে।
এর কারণগুলো হলো:
প্রথম দর্শনেই প্রেম (First Impression): সুন্দর ডিজাইন প্রথম দেখাতেই ব্যবহারকারীর মনে একটি ইতিবাচক ধারণা ও বিশ্বাস তৈরি করে। আলু ভর্তার সুন্দর প্লেটটা দেখেই যেমন আপনার মনে হয়েছে, "যে রেঁধেছে সে খুবই যত্নশীল।"
ধৈর্য ও ক্ষমা (Patience & Forgiveness): মানুষ সুন্দর ডিজাইনের ছোটখাটো ভুলত্রুটি (যেমন: একটা বাটন লোড হতে একটু দেরি হওয়া) অনেক সহজে ক্ষমা করে দেয়। কিন্তু একটা দেখতে অসুন্দর ও জগাখিচুড়ি সাইটের ক্ষেত্রে তাদের ধৈর্য থাকে শূন্যের কোঠায়। ওই যে, 'সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র!' 😉
আনন্দ (Pleasure): সুন্দর জিনিস ব্যবহার করতে আমাদের ভালো লাগে। এই ইতিবাচক অনুভূতিটা পুরো অভিজ্ঞতাকেই আনন্দদায়ক করে তোলে এবং ব্যবহারকারীকে বারবার ফিরে আসতে উৎসাহিত করে।
বাস্তব জীবনের উদাহরণ
ঢাকার রাস্তার কথাই ভাবুন। একটি লোকাল বাস আর Pathao বা Uber-এর একটি পরিষ্কার সেডান গাড়ি—দুটোই আপনাকে ফার্মগেট থেকে মতিঝিল পৌঁছে দেবে। দুটোরই ইউজেবিলিটি আছে।
কিন্তু বাসের ভাঙা সিট, ময়লা পরিবেশের বদলে আপনি কেন একটি এয়ার-কন্ডিশন্ড, পরিষ্কার গাড়িতে যেতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন এবং তার জন্য হাসিমুখে অতিরিক্ত টাকা খরচ করেন?
কারণ এর Aesthetics বা নান্দনিকতা আপনার পুরো অভিজ্ঞতাকে (User Experience) অনেক বেশি আরামদায়ক ও আনন্দদায়ক করে তোলে।
শেষ কথা
ইউজেবিলিটি হলো একটি প্রোডাক্টের কঙ্কাল—অত্যাবশ্যকীয়, কিন্তু একা যথেষ্ট নয়। আর এসথেটিকস হলো সেই কঙ্কালের উপরের সুন্দর চামড়া, পোশাক এবং সাজসজ্জা, যা তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ, আকর্ষণীয় এবং জীবন্ত রূপ দেয়।
শুধু কঙ্কাল দিয়ে হয়তো কাজ চলে, কিন্তু তাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না।
তাই পরেরবার যখন কোনো ডিজাইন বানাবেন বা বিচার করবেন, তখন শুধু "এটা কাজ করে কি না?"—তা না ভেবে, নিজেকে প্রশ্ন করুন: "এটা কি সেই তালগোল পাকানো ভাতের প্লেট, নাকি যত্ন করে সাজানো রাজকীয় প্লেট?"
আপনার ব্যবহারকারীরা কিন্তু এই যত্নটুকুই সারাজীবন মনে রাখবে।
ইঞ্জিনিয়ার বা ডেভেলপার বন্ধুদের আড্ডায় এই কথাটা একবারও শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। এই 'কাজ চললেই হলো' সিনড্রোম UX জগতের একটি বিরাট মিথ। অনেকেই মনে করেন, একটা প্রোডাক্টের ইউজেবিলিটি (Usability) বা ব্যবহারযোগ্যতা যদি দুর্দান্ত হয়, তাহলে তার সৌন্দর্য বা Aesthetics নিয়ে বাড়তি সময় এবং অর্থ নষ্ট করার কোনো দরকার নেই।
কিন্তু এই ধারণাটা যে কতটা ভুল, তা প্রমাণ করার জন্য আজ আমরা কোনো জটিল টেকনোলজি নিয়ে কথা বলব না। আজ আমাদের আলোচনার বিষয়: এক প্লেট গরম ভাত আর আলু ভর্তা!
দৃশ্যপট ১: 'কাজ চালানো' প্লেট
ভাবুন, আপনি সারাদিন পর প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। আপনাকে এক প্লেটে খাবার দেওয়া হলো। প্লেটে ভাতগুলো ছড়ানো ছিটানো, তার উপর ডাল ঢেলে দেওয়ায় সবকিছু কেমন মাখামাখি হয়ে আছে, আর পাশে আলু ভর্তাটা যেন কেউ দায়সারাভাবে ফেলে রেখেছে।
আপনি কি এটা খেতে পারবেন? হ্যাঁ, অবশ্যই পারবেন। এর পুষ্টিগুণও ঠিক আছে, আপনার পেটও ভরবে। অর্থাৎ, এর ইউজেবিলিটি বা ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
দৃশ্যপট ২: 'মন ভালো করা' প্লেট
এবার ভাবুন, আপনাকে ঠিক একই খাবারগুলো আবার দেওয়া হলো। কিন্তু এবার scénarioটা ভিন্ন:
গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতটা একটা বাটির মাপে সুন্দর করে গোল করে প্লেটের একপাশে রাখা।
পাশে একটা ছোট বাটিতে ঘন ডাল।
তার পাশে নিখুঁতভাবে গোল করা আলু ভর্তার উপর একটা ভাজা শুকনা মরিচ আর সাথে এক টুকরো লেবু আর দুটো পেঁয়াজ কুচি।
দেখেই কেমন একটা যত্ন আর ভালোবাসার অনুভূতি হচ্ছে, তাই না?
প্রশ্ন এবং আসল রহস্য
কোন প্লেটটা দেখে আপনার খেতে বেশি ইচ্ছে করবে? কোন খাবারটাকে আপনার বেশি সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর আর মানসম্মত মনে হবে?
আমি নিশ্চিত, আপনার উত্তর দ্বিতীয়টা। যদিও দুটি প্লেটেই খাবার কিন্তু একই ছিল!
UX-এর দুনিয়ায় এই জাদুকরী ঘটনাটাকে বলা হয় "Aesthetic-Usability Effect"। এর সহজ অর্থ হলো, মানুষ সুন্দর দেখতে ডিজাইনকে সহজাতভাবেই বেশি সহজ এবং কার্যকর (usable) বলে মনে করে।
এর কারণগুলো হলো:
প্রথম দর্শনেই প্রেম (First Impression): সুন্দর ডিজাইন প্রথম দেখাতেই ব্যবহারকারীর মনে একটি ইতিবাচক ধারণা ও বিশ্বাস তৈরি করে। আলু ভর্তার সুন্দর প্লেটটা দেখেই যেমন আপনার মনে হয়েছে, "যে রেঁধেছে সে খুবই যত্নশীল।"
ধৈর্য ও ক্ষমা (Patience & Forgiveness): মানুষ সুন্দর ডিজাইনের ছোটখাটো ভুলত্রুটি (যেমন: একটা বাটন লোড হতে একটু দেরি হওয়া) অনেক সহজে ক্ষমা করে দেয়। কিন্তু একটা দেখতে অসুন্দর ও জগাখিচুড়ি সাইটের ক্ষেত্রে তাদের ধৈর্য থাকে শূন্যের কোঠায়। ওই যে, 'সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র!' 😉
আনন্দ (Pleasure): সুন্দর জিনিস ব্যবহার করতে আমাদের ভালো লাগে। এই ইতিবাচক অনুভূতিটা পুরো অভিজ্ঞতাকেই আনন্দদায়ক করে তোলে এবং ব্যবহারকারীকে বারবার ফিরে আসতে উৎসাহিত করে।
বাস্তব জীবনের উদাহরণ
ঢাকার রাস্তার কথাই ভাবুন। একটি লোকাল বাস আর Pathao বা Uber-এর একটি পরিষ্কার সেডান গাড়ি—দুটোই আপনাকে ফার্মগেট থেকে মতিঝিল পৌঁছে দেবে। দুটোরই ইউজেবিলিটি আছে।
কিন্তু বাসের ভাঙা সিট, ময়লা পরিবেশের বদলে আপনি কেন একটি এয়ার-কন্ডিশন্ড, পরিষ্কার গাড়িতে যেতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন এবং তার জন্য হাসিমুখে অতিরিক্ত টাকা খরচ করেন?
কারণ এর Aesthetics বা নান্দনিকতা আপনার পুরো অভিজ্ঞতাকে (User Experience) অনেক বেশি আরামদায়ক ও আনন্দদায়ক করে তোলে।
শেষ কথা
ইউজেবিলিটি হলো একটি প্রোডাক্টের কঙ্কাল—অত্যাবশ্যকীয়, কিন্তু একা যথেষ্ট নয়। আর এসথেটিকস হলো সেই কঙ্কালের উপরের সুন্দর চামড়া, পোশাক এবং সাজসজ্জা, যা তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ, আকর্ষণীয় এবং জীবন্ত রূপ দেয়।
শুধু কঙ্কাল দিয়ে হয়তো কাজ চলে, কিন্তু তাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না।
তাই পরেরবার যখন কোনো ডিজাইন বানাবেন বা বিচার করবেন, তখন শুধু "এটা কাজ করে কি না?"—তা না ভেবে, নিজেকে প্রশ্ন করুন: "এটা কি সেই তালগোল পাকানো ভাতের প্লেট, নাকি যত্ন করে সাজানো রাজকীয় প্লেট?"
আপনার ব্যবহারকারীরা কিন্তু এই যত্নটুকুই সারাজীবন মনে রাখবে।
এইসব লেখা নিয়ে কি একটা নিউজলেটার চালু করা উচিত?
মেইলে জানাতে পারেন, ভালো সাড়া পেলে শুরু করতে পারি!